মোহাম্মদ মাহবুব আলম:
উল্লেখ্য যে আমরা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বলে খুব চাপাবাজি করি, বক্তৃতার মঞ্চ কাঁপিয়ে ফেলি। তারচেয়েও বেশি চাপামারি যারা নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বলে দাবি করি। আমাদের সকল চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যত আবেগ তা ঐ চাপাবাজি পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। বাস্তবতার সাথে এর কোন সাদৃশ্য নাই। যাদের কারণে আজকে আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ আজ আমরা তাদেরকে সম্মান দিতে পারছি না। এমনই এক বীর মুক্তিযোদ্ধা পাবনার বেড়া উপজেলার তাহেজ উদ্দিন সরকার।গত ১৮ ই মে পাবনার বেড়া উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা তাহেজ উদ্দিন সরকার মৃত্যুবরণ করলে পরদিন ১৯ শে মে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানা যায় জেলা সদর নির্বাহী কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন ।
জানাযায় বীর মুক্তিযোদ্ধার লাশ চাটাই দিয়ে বেষ্টন করে রাখা হয়েছে। যেখানে থাকবার কথা জাতীয় পতাকার বেষ্টন। যেই পতাকার জন্য তাহেজ উদ্দিন সরকাররা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে নেমেছিলেন, শত্রুর মোকাবেলা করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। আমাদের আজকের এই স্বাধীন বাংলাদেশ, আমাদের পতাকা তাদেরই দান যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে শত্রুকে পরাজিত করে এই দেশটা উপহার দিয়েছেন। আমরা কতবড় নির্লজ্জের জাতি যে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে তার প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে জানিনা! পাবনা এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা কি তখন ঘুমিয়েছিলেন? কেনো আপনারা প্রতিবাদ করেননি? নাকি আপনাদের চেতনা রাজাকারদের নিকট বিক্রী করে দিয়েছেন? আজকাল চেতনা, আদর্শ, নৈতিকতা অর্থের বিনিময়ে বিক্রী হয়। জানিনা আমাদের গন্তব্য কোথায়।
এ কোন ভুল পথে এগিয়ে চলছি আমরা! পাবনার প্রশাসনে কারা রয়েছেন দায়িত্বে তা খতিয়ে দেখবার দায়িত্ব সরকারের। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় এর দায় এড়াতে পারে না। কাদেরকে খুশি করতে এমন উপহাস করা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমানের মধ্য দিয়ে? এই ঘটনাটি সহ্যের সীমা লঙ্ঘন করেছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যাদের সংশ্লিষ্টতায় মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে তাদের উপযুক্ত বিচার দাবি করছি। পাবনা এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সংসদে কারা দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছেন, তাদের ভূমিকাই বা কি খুব জানতে ইচ্ছে করছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান সহ্য করার মতো নয়। তারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততোদিন তাদের মর্যাদা থাকতে হবে সবার উপরে।
Leave a Reply