সোহাগ জোয়াদ্দার :
দেশে চলছে চোরের উপর বাটপারী। অবৈধ গ্যাস সংযোগকারীদের খোঁজে নামধারী সাংবাদিক ও বিভিন্ন সংস্থার লোকেরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন পাড়া মহল্লা ও আবাসিক বাণিজ্যিক এলাকায় চোরের মতো ঘুরে বেড়ায়। ঘরবাড়ীর আনাচে কানাচে গ্যাস লাইনের রাইজার খুজে।
অবৈধ লাইনের খোঁজ পেলেই কয়েকজন মিলে একসাথে ক্যামেরা বুম নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে ছবি তুলে ভিডিও করে আতঙ্ক ছড়ায়। একজনে বলে তিতাসের এমডিকে ফোন দাও, আরেকজন বলে তিতাসের মোবাইল কোর্ট আছে এখনি জানালে লাইন কেটে নিয়ে যাবে ইত্যাদি নাটক কাহিনী করে প্রথমেই ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। এরপর শুরু হয় অবৈধ সংযোগকারীদের সাথে বোঝাপাড়া। সেটেলমেন্ট হয়ে যায় ৫-১০ হাজার টাকা আবার কোন কোনটি লাখ টাকা পর্যন্ত পৌঁছায়। কিছুক্ষণ আগে যারা সিংহের মতো হুংকার দিয়েছিল তারাই এবার বিড়ালের মতো টাকা পেয়ে ম্যাঁও ম্যাঁও করে সেখান থেকে প্রস্থান করে।
এসব নামধারী সাংবাদিকদের মধ্যে দু’একজনের সাথে তিতাসের হুমড়া চোমড়া টাইপের কর্মকর্তা দু’একজনের সাথে পরিচয় আছে। তারাও আবার বিভিন্ন অবৈধ সংযোগকারীদের নিকট হইতে মাসিক মাসোয়ারা খায়। কোথায় কোন অবৈধ সংযোগ আছে নামধারী সাংবাদিকরা খোঁজ খবর দেয়।
এ যেন চোরে চোরে মাস্তত ভাই। তারা মিলে মিশে হারাম পন্থায় আয়কৃত টাকা নিজেদের পকেটে ভরিয়া ডাকাতের মতো হাসিয়া বলে বিভিন্ন অবৈধ সংযোগকারীদের আশ্বস্ত করে জানায়, অন্য কেউ ডিস্ট্রাব করলে আমাকে ফোন দিবেন। এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর উত্তরার ফায়দাবাদ এলাকায়। তিতাসে কর্মরত আমজাদ নামে একজন ব্যক্তি জনৈক সাংবাদিকের সাথে একটি অবৈধ গ্যাস সংযোগকারীর বাসায় প্রবেশ করে সেখান থেকে ৪০ হাজার টাকা নেয়। সেই টাকার ভাগ থেকে মাত্র পাঁচশত টাকা সাংবাদিককে দিলে তিনি রাগান্বিত হইয়া সেখান থেকে চলে এসে বিষয়টি হাটে হাড়ি ভাঙ্গার মতো সবাইকে জানালে বেরিয়ে আসে থলের বেড়াল।
তিতাসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমজাদের নাকি গুলশানের আশেপাশে বিশাল অট্টালিকা আছে। তার কোন অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকারী তিতাসের টিমের প্রয়োজন হয়না। সে নিজেই তিতাসের আইডি কার্ড দেখিয়ে বিভিন্ন অবৈধ সংযোগকারীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা। বর্তমান গোয়েন্দা অধিদপ্তর (ডিবি) যেমন নতুন পোশাক আবিষ্কার করেছেন, রয়েছে তাদের নিজস্ব কোড তেমনি তিতাসেও লাইন বিচ্ছিন্নকারীদের পোশাক এবং কোড সম্মেলিত আইডি কার্ড থাকলে বাহিরের কেউ যেয়ে অবৈধ লাইন কাটার নামে গ্রাহককে হয়রানি করতে পারবেনা।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply