ভান্ডারিয়া প্রতিনিধি :
পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার মধ্য পৈকখালী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আঃ জলিল খলিফার সন্তানরা দীর্ঘদিন যাবৎ জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে হয়রানি করে আসছে ঐ এলাকার কয়েকটি নিরীহ পরিবারকে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সদস্যদের মধ্যে মমতাজ বেগম জানান, আমার বাবা নুর মোহাম্মদ খলিফা ৮৮ শতাংশ সম্পত্তি পৈত্রিক ও ক্রয়সূত্রে মালিক।
দীর্ঘ বছর পূর্বে জমি নিয়ে একটি বন্টন মামলার মাধ্যমে মহামান্য আদালত পাকা পিলার স্থাপন করে সীমানা নির্ধারণ করে যার যার জমি তাকে বুঝিয়ে দেয়। গত এক বছর পূর্বে আমার চাচা মুক্তিযোদ্ধা আঃ জলিল খলিফার মৃত্যুর পরে তার সন্তান আবুল কালাম খলিফা, মামুন খলিফা, ফাহাদ খলিফা, দুলালী বেগম, সোনালী বেগম এবং জামাই মুক্তা আকন সম্মিলিতভাবে তিনটি বিল্ডিং এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্ধকৃত একটি বিল্ডিং এর নির্মাণ কাজ শুরু করে। কিন্তু আমাদের দখলীয় সম্পত্তির মধ্যে প্রবেশ করে জোর পূর্বক নির্মাণ কাজ করে ৪২ শতক সম্পত্তি জবরদখল করার পায়তারা করে আসছে।
উক্ত বসত ঘরের নির্মান কাজ আমাদের ভোগদখলীয় জমিতে করতে গেলে আমি বাঁধা প্রদান করি। কিন্তু তারা আমার বাঁধা উপেক্ষা করে নির্মাণ কাজ করতে থাকে এবং আমাকে ও আমার পরিবারকে মিথ্যা মামলা সহ খুন জখম করার হুমকি দেয়। আমি অনুপায় হইয়া আদালতের স্মরণাপন্ন হই এবং পিরোজপুর বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করি।
যাহার এম.পি মামলা নং- ৫৪৯। আমি কেন আদালতে গেলাম এবং আদালত কেন গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ করলো সেই জের ধরে পুনঃরায় আমি সহ কয়েকটি নিরীহ পরিবারকে একের পর এক মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানীসহ খুন জখমের হুমকি প্রদান করে আসছে। এছাড়াও প্রতিবেশী আঃ লতিফ সিকদার, পিতা- মৃতঃ মোহাব্বদ আলী সিকদার এই মুক্তিযোদ্ধা আঃ জলিল খলিফা এবং মোশারফ খলিফা এর ৪১.২৫ শতক জমি ক্রয় করেন। কিন্তু জলিল খলিফার সন্তানরা বর্তমানে ঐ সম্পত্তির ৩৪ শতক ভুয়া রেকর্ড দেখিয়ে জমি চাষাবাদে বাধা প্রদান করিলে আঃ লতিফ সিকদার অনুপায় হইয়া বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন যাহার এম.পি কেস নং-৭৩৭। উক্ত মামলার কারণে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানরা আঃ লতিফ সিকদার এর পরিবারকেও প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে। জলিল খলিফার মেঝ ভাই মোশারফ খলিফা জানান, আমি আমার বাবার যে সম্পত্তি পেয়েছি তার থেকে সংসার চালাতে কষ্ট হওয়ায় কিছু সম্পত্তি বিক্রি করি কিন্তু বিক্রিবাদ কিছু সম্পত্তি বসতবাড়িতে আছে।
আমি সংসার পরিচালনার জন্য অর্থের অভাবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে বসবাস করেছি পরবর্তীতে আমি বাড়িতে আসলে আমার ছোট ভাই জলিল ও তার ছেলেরা আমাকে বাড়িতে বসবাস করার কোন জায়গা দেয় নাই। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের নিকটে ধর্না দিয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে নিরুপায় হইয়া বিভিন্ন স্থানে বসবাস করি এবং বর্তমানে অতি কষ্টে থাকার কারণে উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব মিরাজুল ইসলাম এর নিকট সাহায্যে চাইতে গেলে তিনি উপজেলা পরিষদের মধ্যে পরিছন্ন কর্মী হিসেবে আমাকে নিয়োগ দেন। সেখান থেকে সামান্য বেতন পেয়ে কোনভাবে বেঁচে আছি। আমার ভাই মারা যাওয়ার পর তার তিন ছেলের (পুলিশ ডিপার্টমেন্টে সরকারি চাকুরীরত) কাছে চাচা হয়ে আমার পৈত্রিক সম্পত্তিতে ঘর তুলে থাকার জন্য গিয়েছি কিন্তু সবাই আমার সাথে খারাপ আচরণ করে এবং আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। বর্তমানে আমি আমার পরিবার নিয়ে খুবই মানবেতর জীবন-যাপন করছি।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply