আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ভারতে গিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এর নেতারা চীনের আগ্রাসী মনোভাবের কথা উল্লেখ করে ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অনেক দেশই গত একমাসে চীন অভিমুখী। সফরের ঢল নেমেছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডের লেয়েন এই মুহূর্তে বেজিংয়ে। সম্প্রতি তিনি ব্রাসেলসে একটি বক্তৃতায় ইউরোপের ভবিষ্যৎ বাণিজ্য-দিশা তৈরি করে দিতে চেয়ে বলেছেন, চীনের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া ইউরোপের জন্য ক্ষতিকর। বরং চীনের সঙ্গে সম্পর্কে যা যা ঝুঁকি বা বিপদের দিক রয়েছে, সেগুলি কমিয়ে আনতে হবে।
গতকালই ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো বৈঠক করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে। ইউক্রেন যুদ্ধ কীভাবে থামানো যায়, সে নিয়ে কথা বলেছেন। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ় নভেম্বরে চিনে গিয়েছিলেন। ডিসেম্বরে ইউরোপীয় কাউন্সিলের কর্তা শার্ল মিশেল যান সে দেশে। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজও গত সপ্তাহে বেজিং সফর করেছেন।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, ইউরোপের নেতাদের চীনে এতবার সফরের একাধিক উদ্দেশ্য রয়েছে। প্রথমত, রাশিয়াকে ক্রমাগত সামরিক সাহায্য জোগানো থেকে বেজিংকে বিরত রাখা। ইউরোপের ধারণা, চীন যদি তার যুদ্ধ সরঞ্জাম নিয়ে পুরোপুরিভাবে রাশিয়ার পাশে দাঁড়ায়, খুব বড় মাপের সংঘাত ও সঙ্কট এড়ানো যাবে না। দ্বিতীয়ত, যে ভাবে মস্কো বেজিংয়ের উপর ঝুঁকে পড়ছে, তা ইউরোপের কৌশলগত স্বার্থের জন্যও সহায়ক নয়। বরং চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ালে রাশিয়ার সঙ্গে প্রয়োজনীয় দর কষাকষি করতে পারবে ইউরোপ। তৃতীয়ত, আমেরিকা ও চিনের ভূ-রাজনৈতিক এবং বাণিজ্য যুদ্ধের শরিক যে ইউরোপ হতে চায় না, সেই বার্তাও জিনপিংকে দিতে চাইছে ইউরোপীয় কমিশন। এছাড়াও ইইউ এবং চীনের মধ্যে রয়েছে ৯০ হাজার কোটি ডলার বাণিজ্য ও পরিষেবা চুক্তি।
বিষয়টি ভারতের কাছে চিন্তার। কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, কোয়াড বা আমেরিকার নেতৃত্বাধীন চতুর্মুখী অক্ষের সদস্য না হলেও ফ্রান্সের স্বার্থ জড়িয়ে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগারীয় অঞ্চলকে ঘিরে। এখানে ফরাসি দ্বীপগুলি রয়েছে, যা নৌ বাণিজ্য পরিবহণের অন্যতম স্পর্শকাতর এলাকাও বটে। ফ্রান্সের সঙ্গে চীনের চুক্তি ভারতের জন্য অনুকূল না ও হতে পারে।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply