(ভূমিদস্যু সাখাওয়াত হোসেন টুকুর জাল জালিয়াতিকে ঘিরে বিভিন্ন ভুক্তভোগীর প্রায় ২ শতাধিক মামলা। টুকুর হুংকার বাংলাদেশে আমার ২৫০ বিঘা জমি আছে। আমি বৈধ হই আর অবৈধ হই কেউ আমাকে কিছু করতে পারবে না। টুকুর বিরুদ্ধে অভিযোগ বিক্রিত জমি অবৈধভাবে দখলের চেষ্টা করে গরীব মানুষদের করছে ভিটা ছাড়া।)
এ.আর মজিদ শরীফ/সাগর :
রাজধানী উত্তরখান থানার মুন্ডা লালবাগ সহ আশে পাশের এলাকায় কয়েক হাজার বাসিন্দা ভূমিদস্যু জালিয়াত চক্রের হোতা সাখাওয়াত হোসেন টুকুর কাছে তার মিথ্যা বেড়াজালে বন্দি বলে অভিযোগ উঠেছে। ভূক্তভোগীদের ভাষ্য তারা স্বাধীন দেশে পরাধীনভাবে বসবাস করছে। ভূক্তভোগীরা নিজেদের একশত বছরের বাপ-দাদার ভিটে বাড়িতেও শান্তিতে থাকতে পারছে না।
নেই তাদের কোন স্বাধীনতা। আতঙ্কগ্রস্থ ভূক্তভোগী সকলের দাবি আমরা ঠিকমতো রাতে ঘুমাতেও পারি না টুকু ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে। এই চক্রের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় ও পুলিশের শীর্ষ দপ্তরেও আবেদন করেও এলাকাবাসী কোন রেহাই পায়নি। জমি সংক্রান্ত বিষয়ে এ যাবৎকালে সাখাওয়াত হোসেন টুকুর বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং থানায় সাধারণ ডায়েরী রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।
১৯১৭ সালের রেকর্ড ম্যানুয়েলের ১২১ নং বিধির আদেশপত্রে সহকারী কমিশনার ভূমি ক্যান্টনমেন্ট সার্কেল ঢাকা এর স্বাক্ষরিত একটি আদেশপত্রে দেখা যায় উত্তরখান ভূমি অফিস সার্ভেয়ার কর্তৃক দাখিলকৃত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, সিএস ও এসএ রেকর্ডিও মালিক ওয়াশিন ব্যাপারীর কন্যা কুরশি বানু পৈত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে বিগত ০৮/০৪/১৯৫২ ইং তারিখে ৩৪৬৮ নং সাব কবলা দলিল মূলে মোসাম্মদ রশিদা আক্তার খাতুনের নিকট বিক্রয় করলে আরএস জরিপে দাতা কুরশি বানু ও অন্যান্য ওয়ারিশদের সাথে মোছাঃ রশিদা আক্তার খাতুন জং সাজেদুর রহমান ভূঁইয়ার নামে রেকর্ড ভুক্ত করে ভোগ দখলে থাকাকালীন মোঃ রফিকুল ইসলাম, পিতা- সাজেদুর রহমান ভূঁইয়াকে ওয়ারিশ রাখিয়া মৃত্যু বরণ করিলে মাতার ওয়ারিশ মোঃ রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার নিকট হতে বাদী পক্ষ বিগত ২৬/০৭/১৯৯৮ ইং তারিখে ১১৩৪৫ নং সাব কবলা দলিল এবং ১০/০১/১৯৯৯ ইং তারিখে ৪৯৬ নং সাব কবলা দলিল মূলে যথাক্রমে (০.০৪৯৫+০.০৩৩০) = ০.০৮২৫ একর ভূমির মালিকানা লাভ করে আরএস মোতাবেক বিগত ১৬/০৮/২০০৪ ইং তারিখে ১০১৫৮/২০০৪ নং নামজারী ও জমাভাগ মূলে ভূমি উন্নয়নকর পরিশোধ করেন। মহানগর জরিপে বাদী পক্ষ চূড়ান্তভাবে ১৩৭০২ নং খতিয়ানে ৪৩৩৫ নং দাগে ০.০৮২৫ একর ভূমি নিজ নামে রেকর্ড করে কাটা তারের বেড়া দিয়ে ভোগ দখলে আছেন। উল্লেখ্য তাদের নিকট হতেই কালাচান জমি বায়না করেন।
বায়না সূত্রে জমির মালিক মোঃ কালাই চাঁন গং জমির পরিমাণ ৫ কাঠা, খতিয়ান নং সিএস-১০৯১, এসএ-১৭১৩, আরএস-৭৪৯, মহানগর জরিপে- ১৩৭০২, দাগ নং- সিএস ও এসএ-৩৯৮, মহানগর জরিপে- ৪৩৩৫, এসএ ও আর.এস- কুলশি বানু ও রাসিদা আক্তারের নামে রেকর্ড ভুক্ত ও সিটি জরিপে রেকর্ড ভুক্ত সামসু উদ্দিন ও ফাতেমা খাতুন কুলসুমের নামে ১৯৫২ সালের দলিল বলে এরা মালিক দলিল নং- ৩৪৬৮। যা টুকু এবং তার বাহিনী অবৈধ ভাবে দখল করার চেষ্টা করছে। বিবাদী খন্দকার সাখাওয়াত হোসেন টুকু তার মালিকানা সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র উপস্থাপন করতে পারেনি।
তিনি উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করার জন্য তর্কিত নামজারী করেছেন। এছাড়া উত্তরখান ভূমি অফিসের মহানগর ভলিয়মে মহানগর ১৩৭০২ নং খতিয়ানে ১১৩০৭/১১-১২ নং কেস মোতাবেক ৪/২৭ নং জোত খুলে রেখেছেন। কিন্তু অত্র সার্কেল অফিসের মহানগর ভলিয়মে কোন কর্তন বা সংশোধন নেই। রেকর্ড অনুযায়ী বাদীর নাম সঠিক আছে। পক্ষান্তরে বিবাদীর কোন দখল বা মালিকানা স্বত্ব নেই এবং উক্ত ভূমিতে ভূমি উন্নয়নকর ব্যতিত সরকারী কোন স্বার্থ জড়িত নেই মর্মে সংশ্লিষ্ট ভূমি সহকারী ও কর্মকর্তা ও সার্ভেয়ার প্রতিবেদনে প্রতিয়মান।
আদেশ হয় যে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ এর ১৫০ ধারা বিধান মোতাবেক সুষ্ঠ ভূমি ব্যবস্থাপনার স্বার্থে ক্যান্টনমেন্ট সার্কেলাধীন উত্তরখান মৌজাস্থিত নামজারী ও জমাভাগ নং ১১৩০৭/১১-১২ ও সৃজিত জোত নং ০৪/২৭ বাতিল ক্রমে উক্ত ভূমি মূল খতিয়ানে আনায়ন পূর্বক তামিল প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য ভূমি সহকারী কর্মকর্তা উত্তরখান অত্র অফিসের নাজিরকে আদেশ দেওয়া হলো। উক্ত নামজারী হতে সৃষ্ট সকল নামজারী জোত বাতিল হবে। এ আদেশ সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করা হোক। এরকম আদেশের পরেও সরকারী সকল নিয়মকে উপেক্ষা করে ভূমিদস্যু টুকু জাল জালিয়াতীতে সব সময় থাকে মত্ত। সে কোন বিচারীক মজলিশে কাগজপত্র প্রদর্শন করেনা।
এদিকে জমি জমার অবৈধ ব্যবসা আর জাল-জালিয়াতি করে সাখাওয়াত হোসেন টুকু সম্পদের পাহাড় গড়ে টঙ্গী বাজারে রুপালী এন্টারপ্রাইজ সহ মুন্ডা, ফুলপুকুর, উত্তরা, টঙ্গী, গাজীপুর, শিলমুন, সাতাইশ, দত্তপাড়া সহ অনেক নামিদামি এলাকায় গড়ে তুলেছে ছয়-সাত তলা বিশাল ইমারত।
এসব বৈধ অবৈধ সম্পত্তির বিষয়ে দূর্নীতি দমন কমিশন (দূদক) এর তদন্ত অতীব জরুরী বলে দাবি তুলেছে ভূক্তভোগীরা। তাদের দাবি সঠিকভাবে তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলায় তার যোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার কুসুম বাগানে কোন দখলবাজদের ঠাঁই নেই। আগে সোনার বাংলা, পরে অন্য সব। সাধু সাবধান।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply