বেলায়েত হোসেন :
রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা বনানী থানাধীন মহাখালী ফুটপাত ভাড়া দিয়ে কোটিপতি বনে গেছেন বেশ কয়েকজন ফুটপাত চাঁদাবাজ। এদের মধ্যে অন্যতম লুৎফর রহমান টয়লেট মমিন এবং তার সাঙ্গোপাঙ্গরা। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে।
সরেজমিনে তদন্ত করে দেখা যায়, মহাখালী টাঙ্গাইল বাস স্টান্ড থেকে টিভি গেট পর্যন্ত ফুটপাত এবং মহাসড়কের রাস্তা দখল করে এসব চাঁদাবাজরা বিদ্দর্পে পুলিশের সহযোগিতায় জনসাধারণের জন্য নির্মিত ফুটপাত ভাড়া দিয়ে এক একটি দোকান থেকে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছেন।
আইসিডিআরবি (কলেরা হাসপাতাল) গেট থেকে জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত লুৎফর রহমান, মামা প্লাজা থেকে শুরু করে খাবারদাবার হোটেল এবং কাঁচা বাজারের সামনে টয়লেট মমিন এবং তার সাঙ্গোপাঙ্গরা জলখাবার পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। কলেরা হাসপাতালের গেট থেকে টাঙ্গাইল বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ এবং চাঁদা টাকা তোলেন মহাখালী পুলিশ বক্স এর কনস্টেবল হাসান। এখানেই শেষ নয়, হাসানকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় টাঙ্গাইল বাস স্ট্যান্ড থেকে টিভি গেট পর্যন্ত। মহাখালী টাঙ্গাইল বাস স্ট্যান্ড থেকে টিভি গেট পর্যন্ত যতগুলো দোকান আছে প্রত্যেকটি দোকান থেকে চাঁদার টাকা উত্তোলন করেন কনস্টেবল হাসান। দীর্ঘদিন তিনি এলাকায় দায়িত্বে থাকার কারণে চাঁদা টাকা উত্তোলনে মহাখালী বক্সের ইনচার্জ এর পছন্দের মানুষ এই হাসান।
মহাখালী পুলিশ বক্সে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকালেও তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেয়ে ফুটপাতে চাঁদাবাজিতে নজর বেশি। একের পর এক পুলিশ বক্স এর দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জেরা আসে আর যায় কিন্তু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয় না। ডেনডিখোরদের উৎপাতে ফুটপাথ এবং রাস্তা দিয়ে চলাচল করা দুরূহ। এ ব্যাপারে স্বেচ্ছায় কোন প্রকার ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি স্থানীয় পুলিশ বক্সের। বড় ধনের দুর্ঘটনা ঘটার পর টলক নড়ে প্রশাসনের। তখন শুরু হয় পুলিশ বক্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বৃন্দের দৌড়ঝাঁপ। ফুটপাত দখল শেষে ব্যস্ততম সড়কেও দখল করে রাখেন মমিন, লুৎফুর রহমান এর সহযোগীরা। ফলে ব্যস্ততম এই সড়কে যানজট প্রতিনিয়ত লেগেই থাকে। মহাসড়কের একটি বিশাল অংশ দখলদারদের দখলের কারণে যানজটের সৃষ্টি, এই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহাখালী বাজারের একজন ব্যবসায়ী জানান, মামা প্লাজা থেকে জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান এবং জনসাস্থ্যের গেট দখলদারদের দখলে থাকার কারণে মহাখালীতে অবস্থিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে আসা রোগী এবং তাদের স্বজনদের দুর্ভোগ চরমে। মাঝেমধ্যেই পড়তে হয় বিলম্বনায়।
এ ব্যাপারে ট্রাফিক গুলশান ডিভিশনের মহাখালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার, ট্রাফিক বলেন, আমি যত সম্ভব চেষ্টা করি মহাসড়ক নিরাপদ রাখার জন্য। কিন্তু থানা থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কারণে ফুটপাতকে দখল মুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, এখানে তাদের স্বার্থ জড়িত। থানা পুলিশ ট্রাফিক পুলিশকে সহযোগিতা করলে এসব ফুটপাত দখল মুক্ত করা কোন সমস্যাই না।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply