নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
‘শিক্ষকরা সংকটে নেতৃত্ব দেন, ভবিষ্যৎ পুনঃনির্মাণ করেন’। শিক্ষকরা হচ্ছেন মানুষ গড়ার কারিগর। বিশ্ব শিক্ষক দিবসে সব শিক্ষককে জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা। একজন আদর্শ মানুষ গড়তে আদর্শ শিক্ষকের কোনো বিকল্প নেই। আর শিক্ষকেরা মোমবাতির মতো নিজে পুড়ে অন্যকে শিক্ষার আলো দান করেন।
শিক্ষা মানুষের দায়িত্ববোধকে জাগ্রত করে। তার অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সজাগ, সবাক, সকর্ম করে তুলে মানুষের মধ্যে ঘুমন্ত মানবতাকে জাগ্রত করে। আর পেশাগত দ্বায়িত্ববোধ, মেধা, প্রজ্ঞা ও জ্ঞান দক্ষতায় পরিপূর্ণ শিক্ষক হচ্ছেন দেশ ও জাতির অনন্য সম্পদ।
শিক্ষা জীবনের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত অসাধারণ অনেক ভালো শিক্ষকের ছাত্র হতে পেরেছি। কিন্তু যদি আমার দেখা সবচেয়ে সেরা শিক্ষক সম্পর্কে বলতে হয়, তাহলে একজন শিক্ষকের কথাই আমি বলবো। যিনি আমার এই ক্ষুদ্র জীবনের চলার পথে সবচেয়ে বেশি প্রেরণা ও উৎসাহ জুগিয়েছেন। আমার সেই প্রিয় শিক্ষকের নাম মোজাহিদুল ইসলাম মজনু স্যার । তার হাতেই আমার শিক্ষা জীবন শুরু। আমার প্রথম স্কুল ৫৫ নং পশ্চিম হাজরা বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
উক্ত স্কুলেই প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে পঞ্চম শ্রেণী পাস করি। উল্লেখ্য তিনি এখন অবসরপ্রাপ্ত। তিনি বিবাহিত জীবনে ৬ সন্তানের জনক। তার প্রথম সন্তান মোর্শেদুল আলম লিটন বিদেশি কোম্পানির এমডি, ছোট ছেলে খোরশেদুল আলম রাজন মাদারগঞ্জ বালিজুরি শাখার অগ্রণী ব্যাংক ম্যানেজার, মোর্শেদা পারভীন লিপি কিন্ডারগার্টেন শিক্ষিকা, আশরাফুন নাহার লিলি এমবিবিএস ডাক্তার, খোরশেদা পারভীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সানজিদা পারভীন মিলা অনার্স মাস্টার্স, তার জামাতা ডক্টর বায়জিদ মেজর কুমিল্লা সেনানিবাস।
শিক্ষার্থীদের কাছে তিনি কেবলই একজন শিক্ষক নন, একজন ভালো বন্ধুও বটে। আমার মতো হাজারো ছাত্রের প্রিয় শিক্ষক, অভিভাবকতুল্য মানুষ। শিক্ষকদের কাছেও সমানভাবে জনপ্রিয় ছিলেন। ছাত্রছাত্রীদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা যেকোনো প্রয়োজনে যেকোনো সময় তার কাছে যেতে পারেন এবং পরামর্শ নিতে পারেন। অনেক পেশা থাকা সত্বেও তিনি শিক্ষকতা পেশাটাকেই বেছে নিয়েছেন। তিনি ভেবেছেন দেশ ও জাতি গঠনে শিক্ষকতা পেশায় তিনি বেশি সময় দিতে পারবেন। আর এই জায়গা থেকে তৈরি হবে অসংখ্য সৎ, মেধাবী, যোগ্য নেতৃত্ব। যারা দেশ ও জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবেন।
তিনি তার পাঠদান শুধু সিলেবাস কিংবা শ্রেণিকক্ষে সীমাবদ্ধ রাখেন না। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে একজন দক্ষ নাগরিক হিসেবে নিজেকে তৈরি করার সব ধরনের মন্ত্র শিখিয়ে দিতেন। প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের বাইরে তিনি নিজেকে একজন ভালো বন্ধু হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশে যান। যা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে দেখার সুযোগ করে দিয়েছিল। একজন শিক্ষার্থীর দৃষ্টিতে সেরা শিক্ষক হওয়ার গৌরব অর্জনে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করেন। তিনি অবসরপ্রাপ্ত হয়ে আইডিয়াল কিন্ডার গার্ডেন প্রি ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।পঞ্চম শ্রেণি পাস করে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হই ঐতিহ্যবাহী হাজরাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়। এখানেও আমার প্রিয় শিক্ষকের তালিকায় রয়েছিলেন, অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরহুম শামসুল ইসলাম। যদিও স্যারের সাথে তেমন খোলাখুলিভাবে মিশতে পারিনি, তবে আমি বরাবর তখন তার কথাগুলো অনুসরণ করে ছিলাম। আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি সংবাদকর্মী হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করছি।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোজাফফর স্যার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম হাসান হাজারী’র স্ত্রী হাফিজা বেগম আপা, প্রফেসর টি এম রিয়াছত তাজ’র স্ত্রী রোজী আপা, পারভীন আপা, উচ্চ বিদ্যালয় বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোতালেব বিএসসি, মরহুম মাসুদ স্যার, মরহুম শামছুল হক (ফিজিক্যাল )স্যার,আব্দুল করিম স্যার, ইজারুল ইসলাম স্যার, আমিনুল ইসলাম স্যার,মরহুম আব্দুর রউফ স্যার,আলাউদ্দিন স্যার, আব্দুল মান্নান স্যার, শ্রী নিধিরাম বিশ্বাস স্যার এ ছাড়াও যারা আমার শিক্ষক রয়েছেন তাদের প্রতি এই মহান দিনে শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা। আপনারা আমাদের গড়ার কারিগর। যারা বেচে আছেন আপনাদের এই কর্মের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি উত্তরোত্তর সাফল্য বয়ে আনবে এটাই সবার প্রত্যাশা। প্রতিষ্ঠানের সব সমস্যাগুলো কাটিয়ে মনোরম পরিবেশে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষালাভ করে সততার সাথে দেশ ও জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। একজন ছাত্র হিসেবে জানাচ্ছি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের এই পরিশ্রম শুভকর হোক।
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সাল থেকে প্রতি বছর ৫ অক্টোবর তারিখ বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে “বিশ্ব শিক্ষক দিবস”। এই দিবসটি শিক্ষকদের অবদানকে স্মরণ করার জন্য পালন করা হয়।
ইউনেস্কোর মতে, বিশ্ব শিক্ষক দিবস শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পালন করা হয়। বিশ্বের ১০০টি দেশে এই দিবসটি পালিত হয়ে থাকে।
Leave a Reply