আফতাব হোসেন, গাইবান্ধা :
চলমান বন্যায় নতুন করে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে গাইবান্ধা জেলার একমাত্র কৃষিভিত্তিক ভারিশিল্প কারখানা মহিমাগঞ্জের রংপুর চিনিকল। চিনিকলের আওতাধীন ইক্ষুজোন এলাকাগুলোর বিস্তীর্ণ উঠতি আখ ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় আগামি মাড়াই মৌসুমে কাঙ্খিত আখ না পাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এরফলে নতুন করে লোকসানের মুখে পড়বে চিনিকলটি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও এলাকার আখচাষীরা।
গতকাল বুধবার সকাল থেকে সারাদিন ধরে মহিমাগঞ্জের দেওয়ানতলা সেতু এলাকা থেকে সাহেবগঞ্জ বাণিজ্যিক খামার পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকার বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া আখ ক্ষেত পরিদর্শন করে চিনিকল কর্তৃপক্ষের একটি দল এ আশংকা ব্যক্ত করেছেন। তবে তারা এ সময় বিভিন্ন গ্রামে নৌকা থামিয়ে চাষীদের সাথে উঠান বৈঠকে আলোচনায় জানিয়েছেন, এবারের বন্যায় অন্য সকল ফসল একেবারে বিনষ্ট হলেও কেবল মাত্র আখই এখনো আশার আলো হয়ে জেগে আছে। কারণ পানির নিচে সম্পুর্ণ তলিয়ে গেলেও আখ ক্ষেত পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্থ হয়না। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই প্রয়োজনীয় পরিচর্যার মাধ্যমে লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ কিছুটা হলেও দেখা সম্ভব।
রংপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউসুফ আলী শিকদার জানান, গতকাল বুধবার তিনিসহ রংপুর চিনিকলের মহব্যবস্থাপক (প্রশাসন), মহাব্যবস্থাপক (কৃষি)সহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের একটি দল নৌকায় প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকার পানিতে নিমজ্জিত আখ ক্ষেত পরিদর্শন করেন। এ বছর রোপণকৃত ৫হাজার ৪শ’ ৮৫ একর জমির উঠতি আখের মধ্যে নিমজ্জিত হয়েছে ৩হাজার ৮শ’ ৩১ একর জমির আখ। এর মধ্যে প্রায় ৫শ’ একর জমির আখ সম্পুর্নরূপে বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। তবে বন্যার পানি নেমে গেলে মাজরা পোকার আক্রমণের সম্ভাবনা আছে। এ সময় দ্রুত সঠিক পোকা দমন ও প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করলে অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্থ জমি থেকে পূর্ণাঙ্গ ফলন পাওয়া সম্ভব।
আখচাষীদের মাঝে সচেতনতামূলক বক্তব্য প্রচার ও ক্ষতিগ্রস্থ চাষীদের সাথে দেখা করার জন্য গতকাল এ দলটি মহিমাগঞ্জের বোচাদহ, চর বালুয়া, রাখালবুরুজ, সিপি সিঙ্গা, সোনাইডাঙ্গা, সাঘাটা উপজেলার কচুয়া, চন্দনপাঠ, গুজিয়া, তালতলা, বোয়ালিয়া, খানসাপাড়া, কাইয়াগঞ্জ, সাতানাবালুয়াসহ কাটাবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে যাত্রাবিরতি করে উঠান বৈঠকে অংশ নেন।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply