রবিউল আলম রাজুঃ
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, হৃদরোগ ও পঙ্গু হাসপাতালে সেবা গ্রহিতা রোগী ও রোগীর আত্মীয়-স্বজনদেরকে দ্রুত ও ভাল সেবা প্রদান করার আশ্বাস দিয়ে বিভিন্নভাবে বিরক্ত করতো। অল্প সময়ে ডাক্তারী সেবা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়।আবার কখনো কখনো অনেক হয়রানির পর সেবা প্রদান করা হয়।
জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতাল সেবা সম্পর্কে সোহরাব হোসেন নামে একজন ব্যক্তি জানান, জামালপুর থেকে রাতারাতি তার মাকে ঢাকায় এনে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের সিকিউরিটি, ঝাড়ুদার খালা, রিসেপশনিস্ট ব্যক্তি থেকে শুরু করে প্রত্যেককে এক্সট্রা বোনাস না দিলে মিলেনা সেবা।
ওয়ার্ডে বেড নেওয়ার জন্য দিতে হয় এক্সট্রা পয়সা। ওয়ার্ডে রোগীকে দেখতে গেলে বা ওষুধের জন্য কয়েক বার যাতায়াত করলে সিকিউরিটিকে বার বার দিতে হয় এক্সট্রা বোনাস। বোনাস না পেলে তাদের ব্যবহার হয় চাড়াল।
আর সিকিউরিটিকে সঠিকমতো বোনাস দিতে পারলে মেয়েদের ওয়ার্ডে পুরুষ প্রবেশে বাঁধা নেই, আর এক্সট্রা পয়সা না পেলে এই সমস্যা, সেই সমস্যা, ভিতরে যাওয়া যাবেনা, নানান তালবাহনা। আবার হাসপাতাল থেকে রোগীর ছুটি দিলে বেডিংপত্র গুছানোর আগেই সবাই ভিক্ষুকের মতো শেষ বোনাস পাওয়ার জন্য হাজির রোগীর সামনে।
এসব ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রচারিত হওয়ার পরও চক্রটি গণউপদ্রব চালাতে থাকে। উক্ত বিজ্ঞপ্তিটি নোটিশ বোর্ড ছাড়াও মাইকিং করে দালালদের উপদ্রব সৃষ্টিকারীদের সতর্ক করা হয়। উপরোক্ত এসব সতর্কীকরণ পদক্ষেপ গ্রহণের পরেও দালাল চক্রের উপদ্রবে সাধারণ মানুষের হয়রানি বন্ধ না হওয়ায় র্যাব-২ নিয়মিত গোয়েন্দা নজরধারী বৃদ্ধি করে।
রাজধানীর বেশ কিছু হাসপাতলে দীর্ঘদিন যাবৎ সংঘবদ্ধ একটি দালাল চক্র দূরদূরান্ত থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের বিভিন্ন রকম ভালো মানের সেবার প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া ও হয়রানি সহ দীর্ঘদিনের সেবা গৃহীতাদের অভিযোগ ৷
এরই ধারাবাহিকতায় ৭ই মার্চ ২০২৩ তারিখে র্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব মোঃ ইকবাল হাসান এর পরিচালনায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, হৃদরোগ ও পঙ্গু হাসপাতালে দালাল বিরোধী বিশেষ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে দালাল চক্রের ৯ জন‘কে গ্রেফতার করে।
আসামীদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত করে প্রত্যেককে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড প্রদান করেন। ভবিষ্যতেও র্যাব-২ এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply