রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের এমফিলের এক শিক্ষার্থীকে নিজের জুতা চাওয়ার অপরাধে মারধর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী অভি সরকার ও কাউসার।
ভুক্তোভোগী আহত শিক্ষার্থীর নাম মো. আব্দুর রাকিবের বাড়ি রাজশাহীর মতিহারধীন বুধপাড়াতে। তিনি ২০১১-১২ বর্ষের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি ওই বিভাগ থেকে এমফিল করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সদস্যও তিনি। থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শের ই বাংলা হলের ৩০৬ নং রুমে থাকে।
অভিযুক্ত হামলাকারী অভি সরকার ও কাউসার সংস্কৃত প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
হল সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাতে রাকিবের রুমমেট জাহিদের বন্ধু অভি ভুলবশত রাকিবের জুতা নিয়ে চলে যায়। রাতেই অভিকে ফোন করে জাহিদ জুতা ফিরিয়ে দিতে বলেন। সোমবার সকালে রাকিবের কক্ষের সামনে অভি জুতা রেখে যায়। বিকালে অভি ও কাউসার আবার ওই কক্ষে গেলে রাকিব ও অভির মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে অভি, কাউসারসহ কয়েকজন রাকিবকে মারধর করে। এতে রাকিবের বাম চোখে লাথি ও মাথায় আঘাত লাগে। পরে সহ-সভাপতি সাদ্দাম এসে তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু জানান, ‘আমি রুমের মধ্যে ছিলাম পাশের রুম থেকে রাকিবের চিৎকার শুনে বের হয়ে দেখি রাকিবকে কয়েকজন মারছে। আমি তাদের পরিচয় জানতে চাইলে বলে তুই কে? এই বলে তারা আবারও মারধর শুরু করেন।
মারধরের শিকার রাকিবের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘আজ বিকেল ৫টার দিকে আমি রুম থেকে বের হওয়ার সময় কাউসার ও অভি এসে বলে ভাই আপনার সাথে একটু কথা আছে রুমের ভিতরে চলেন। এ সময় কেন সে জুতা নিয়েছিল জানতে চাওয়াই আমাকে বলে ভাই একটু রুমের ভিতরে চলেন কথা আছে। এ সময় ভিতরে প্রবেশ করলে অভি সরকার বলে যে তোর নাম কি? বাসা কোথায়? এই বলেই তারা আমাকে মারধর শুরু করে। আমার বাম চোখে লাথি লাগে তবে মাথার আঘাত একটু বেশি মনে হচ্ছে’।
রাকিব আরও জানান, ‘আবাসিকতা ছাড়াই সাদ্দাম রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অভি, কাউসারসহ তার কয়েকজন অনুসারীকে হলে সিট দিয়েছে। আমার রুমমেট জাহিদ এই হলের ছাত্র হলেও এখনও সে আবাসিকতা পাননি। সাদ্দামের নির্দেশেই জাহিদ কয়েক সপ্তাহ ধরে আমার রুমে অবস্থান করেছে।’
তবে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত অভি ও কাউসার বলেন, ‘জুতা নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। তাই বিকেলে আমরা বড় ভাইয়ের (রাকিব) সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। তার সঙ্গে সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। কোন মারধরের ঘটনা ঘটেনি।’
এ বিষয়ে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘রাকিব আর অভির মাঝে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছিল। আমি যেয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি। মারধরের ঘটনা ঘটেনি।’
হলে সিট দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওরা রাতে হলে থাকে না। এই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হওয়ায় প্রায়ই হলে যাওয়া আসা করে, তবে তাকে কোন সিট দেওয়া হয়নি।’
Leave a Reply