শওকত আলী মন্ডল, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের গৃহনির্মানের জন্য সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ২০২১-২২ অর্থবছরে কুড়িগ্রামের রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলায় ৮৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়। ৩০ জুনের মধ্যে বিতরণ করার কথা থাকনেও রহস্যজনক কারণে ৫ মাসেও বিতরণ করা হয়নি জিআর প্রকল্পের অর্থ। কাগজ কলমে জুন মাসে টাকা বিতরণ দেখানো হলেও এখনো টাকা ভুক্তভোগীরা পাননি। তবে সরকারি অর্থ বিতরণে বিলম্ব হওয়ায় বা বিতরণ না করায় সুকৌশলে সরকারের এই অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগও উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
জানা গেছে, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে গৃহনির্মান ও মানবিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে রৌমারী উপজেলায় ৩৬ লাখ ও রাজিবপুর উপজেলায় ৪৮ লাখ অর্থ বরাদ্দ দেয় গত জুনের আগের মাসে। জুনের মধ্যে এ অর্থ ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে বিতরণের কথা থাকলেও রহস্যজনক কারনে ৫ মাসেও বরাদ্দকৃত অর্থ বিতরণ করা হয়নি। নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না আত্মসাতের চেষ্টায় ব্যাংকে টাকা রেখে সময় পাড় করছেন সংশ্লিষ্টরা। সচেতন মহলরা বলছেন, জুন ক্লোজের ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত সুবিধাভোগীদের ভাগ্যে জোটেনি সময় মতো সরকারের ত্রাণের টাকা ও সহায়তা।
বিভিন্ন এলাকার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দুস্থ মানুষেরা দুখেঃ ভরাক্রান্ত মনে অভিযোগ করে জানান, সরকারের বরাদ্দকৃত টাকা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জন্য এসেছে, আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানিনা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, রৌমারী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৩০০ পরিবারের ও রাজিবপুর উপজেলার ৩ টি ইউনিয়নে ৬০০ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়। এরই পেক্ষিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে রৌমারীতে ৩৬ লাখ ও রাজিবপুরে ৪৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদের সরকার বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের বন্যার পর ৫০ জন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের নামের তালিকা জমা দিয়েছি। সরকার অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে, এমন বিষয়ে আমাকে কোন পক্ষ থেকে জানানো হয়নি এবং নতুন করে তালিকা প্রনয়ণের কথাও বলা হয়নি।
কোদালকাটি ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ছক্কু বলেন, আমরা তালিকা জমা দিয়েছি অনেক আগেই। এই জিআর প্রকল্পের টাকা কখন দিবে পিআইও ও ইউএনও সাহেব ভালো জানেন।
জিআর প্রকল্পের টাকা এখনো বিতরণ না করার কারণ জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, চেয়ারম্যানদের তালিকা দিতে দেরি, সময়ও কম ছিলো। তাই বিতরণ সম্ভব হয়নি। জুন মাসেই বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলন দেখাতে হয়েছে কাগজে কলমে। তবে বরাদ্দের টাকা পিআইও অফিসের জিআর একাউন্টে রয়েছে। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান ও ইউএনও স্যার অবগত রয়েছেন। চেয়ারম্যানদের কাছে নতুন করে তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা চুড়ান্ত হলে টাকা বিতরণ করা হবে।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুবন আখতারের সাথে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তবে শুনে জানাবো।
রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত চক্রবর্ত্তী বলেন, চেয়ারম্যানদের তালিকা পাওয়ার পর টাকা বিতরণ করা হচ্ছে। টাকা সঠিক বিতরন হয় কি না আপনারও দেখেন।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply