মোঃ মোশাররফ হোসেন মাসুদ, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে ঃ যমুনা নদীর শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের ভাটপাড়া-, গুধিবাড়ী,জগতলা পয়েন্টে নদী তীর রক্ষা বাঁধে মারাত্মকভাবে ধ্বসে গেছে। গত এক সপ্তাহে গুরুত্বপূর্ণ এই পয়েন্ট গুলোর সিসি ব্লক ধ্বসে নদীতে ব্যাপক ভাঙ্গনের সৃষ্টি করেছে। নদী তীরে বসবাসকারী হাজার হাজার মানুষের মাঝে আতঙ্ক উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। গতকাল সোমবার সরেজমিনে ঘুরে জামিরতা গুদারাঘাট হয়ে ভাটপাড়া নতুন বাজার ও হোট দিঘুলিয়া স্কুল এলাকায় ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা যায়। প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যায়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত যমুনা মেঘনা রিভার ইরোশান ইউরেশান মিটিগ্রেশান প্রকল্পের আওতায় নির্মিত যমুনা নদী রক্ষা বাঁধে ধ্বস। উপজেলার কৈজরী ইউনিয়নে ২০১০ সালে নির্মিত এই বাঁধের ২ বছরে প্রায় ১ হাজার মিটার ধ্বসে গেছে। গত ৩ দিনে আরো প্রায় ৫শত মিটার ধ্বসে পড়ে হুমকির মুখে কৈজুরী ইউনিয়নের গুধিবাড়ী, ভাটপাড়া ও জগতলা গ্রামের দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি হাইস্কুল সহ তিনটি মসজিদ এবং কয়েক হাজার বাড়ী ঘর ও ফসলী জমি। এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে এই নদী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হলেও এর কোন সংস্কার করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। ব্লকের নিচের দিকে মাটি পানির স্রোতে সরে যাওয়ায় এই ধ্বস আরও দ্রুততর হচ্ছে। এক শ্রেণির প্রভাবশালী অসাধু মহল অপরিপরিকল্পিত ভাবে এই বাঁধের পাশ থেকে বালু উত্তোলন করলেও সে দিকে নজর নেই। ফলে, প্রতিনিয়ত ধ্বসের কবলে পড়ে কোটি টাকার বাঁধটি বিলিন হতে চলেছে। এ ব্যাপারে কৈজুরী ইউপি চেয়ারম্যাান সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি যমুনা নদী রক্ষা বাঁধের নতুন করে ধ্বসে যাওয়ার খবর বেড়া পানি উন্নয়ন বোডের্র নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবগত করেছি এবং দ্রুত ধ্বস রোধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস’া গ্রহনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, কৈজুরী ইউনিয়নের যমুনা রক্ষা বাঁধে নতুন করে ধ্বসের কথা আমি শুনেছি। ২০১০ সালে মেঘনা রিভার ইরোশান ইউরেশান মিটিগ্রেশান প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ১০ কিলোমিটার যমুনা নদী রক্ষা বাঁধে সাত বছরেও কোন সংস্কার কাজ হয়নি বলে তিনি জানান। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বেশ কয়েকটি চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। এই বাঁধ সংস্কারের জন্য অল্প কিছুদিনের মধ্যেই একটি বরাদ্দ আসার কথা রয়েছে। বরাদ্দ পেলেই বাঁধ সংষ্কারের কাজ শুরু করা হবে। জামিরতা, গুধিবাড়ি, ভাটপাড়া, লহিন্দাকান্দি গ্রামের মানুষ গুলোর নির্ঘুম রাত কাটছে আতঙ্ক আর উৎকন্ঠার মধ্যে দিয়ে। ভাটপাড়ার সাগর খাঁন জানান, আল্লাহ তায়ালার কাছে সবারই চাওয়া যেন আমাদেরকে ভিটেবাড়ি হারাতে না হয় । শেষ আশ্রয়স’ল হারিয়ে পথে বসতে না হয়। সেই সাথে নদীর পশ্চিমপাড়ের শত শত একর ফসলী জমি নদী গর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply