মোঃ শামছুল হক, জেলা প্রতিনিধি শেরপুরঃ
শেরপুরের নালিতাবাড়ী সীমান্তে বর্ডার হাট স্থাপনের লক্ষে ভারত এবং বাংলাদেশের জেলা প্রশাসক পর্যায়ের ১১ সদস্য বিশিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রস্তাবিত বর্ডার হাটের স্থান পরিদর্শন ও যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার সীমান্তবর্তী পোড়াগাঁও ইউনিয়নের আন্ধারুপাড়া মৌজার খলচান্দা গ্রামের আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ১১১২ (টু এস) ও ১১১২ (থ্রি এস) সংলগ্ন নোম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় ওই যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্ত এলাকায় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সাথে যৌথভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার ও পরিচালনা করার জন্য সরকার বর্ডার হাট স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমে নাকুগাঁও স্থলবন্দর সংলগ্ন এলাকায় বর্ডার হাট স্থাপনের প্রস্তাবনা দেওয়া হলেও ভারতের পক্ষ থেকে তা নাকচ করা হয়।
পরবর্তীতে নতুন করে ভারতের পক্ষ থেকে নাকুগাঁও স্থলবন্দর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে আন্ধারুপাড়া খলচান্দা গ্রামের জিরো পয়েন্ট এলাকায় বর্ডার হাট স্থাপনের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়। এরই প্রেক্ষিতে বুধবার ভারত ও বাংলাদেশের জেলা প্রশাসক পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন করে যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন শেরপুরের জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইদুর রহমান, নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খৃষ্টফার হিমেল রিছিল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঈফফাত জাহান তুলি, বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি)’র সহকারী পরিচালক নাসির উদ্দিন, নাকুগাঁও স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম ও পোড়াগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনসহ শেরপুর জেলার ১১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
অপরদিকে, ভারতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মেঘালয় রাজ্যের তুড়া জেলার ডেপুটি কমিশনার শ্রী জগদীশ চিলানী, ১০০ বিএসএফের কমান্ডেন্ট শ্রী অলয় কুমার তিউরী, এডিশনাল ডেপুটি কমিশনার শ্রী ডিবিজি মমিন, এডিশনাল পুলিশ সুপারিনটেন্ডেন্ট সুচিনাগ এমপিএস, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার শ্রী সুমিত কুমার সিং, ব্লগ ডেভেলপমেন্ট অফিসার শ্রী উত্তম তামু সিএইচ সাংমা, জেলা ফাংশনাল ম্যানেজার শ্রী সেন সেংগাং টি সাংমাসহ তুড়া জেলার ১১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার বলেন, ‘বর্ডার হাট স্থাপনের লক্ষে আজ আমরা ভারত ও বাংলাদেশের জেলা প্রশাসক পর্যায়ের ১১জন করে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে যৌথ সভা করলাম। একইদিনে প্রস্তাবিত বর্ডার হাটের স্থান পরিদর্শন করলাম। আমরা এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পেলেই আমরা পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করবো।
তিনি আরও জানান, প্রস্তাবিত এই বর্ডার হাটটি স্থাপন করা হলে সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান বন্ধসহ ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে স্থানীয়দের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন হবে।
সীমান্ত হাটের প্রথম যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের জুলাই মাসে কুড়িগ্রাম জেলার বালিয়ামারি সীমান্তে সোনাভরি নদের তীরে। উদ্দেশ্য ছিল সীমান্তের দুই পাড়ের মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে চাঙ্গা করে একদিকে তাদের জীবিকার সংস্থান করা এবং অন্যদিকে তাদের জীবন যাত্রার মানের উন্নয়ন। এর আর একটি উদ্দেশ্য ছিল দুদেশের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি, ভালোবাসা এবং ভাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করা। বর্তমানে বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে ১০টি বর্ডার হাট রয়েছে।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply