মোঃ শামছুল হক, জেলা প্রতিনিধি শেরপুর :
বিভিন্ন ধর্মীয় কর্মসুচী পালনের মাধ্যমে এবং ‘মিলন, অংশ গ্রহন ও প্রেরনকর্মে মা মারিয়া’ এই মূলসুরের উপর ভিত্তি করে গতকাল বৃহস্পতি ও আজ শুক্রবার (২৭ ও ২৮ অক্টোবর) শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে শেষ হয়েছে দেশের বৃহত্তম খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের দুই দিনব্যাপী ২৪তম বার্ষিক ফাতেমা রাণীর তীর্থ উৎসব। এ উৎসবটিতে বৃহত্তর ময়মনসিংহ সহ সারাদেশের খ্রিস্টান ধর্মের নারী-পুরুষ ভক্তরা অংশ গ্রহণ করেন।
তীর্থ উৎসবের সমন্বয়কারী রেভান্টে ফাদার তরুণ বনোয়ারী বলেন, উপজেলার সীমান্তবর্তী বারমারী সাধু লিও এর খ্রিস্টধর্মপল্লীতে বিগত ১৯৯৮ সালে পর্তুগালের ফাতেমা নগরের আদলে ও অনুকরনে এই তীর্থ স্থানটি সাজানো হয়। দেশের রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টভক্তদের তীর্থযাত্রা উৎসবটি অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। প্রতি বছর হাজার হাজার খ্রিস্ট ভক্তরাএখানে সমবেত হয়ে ভিন্ন ভিন্ন মূলসুরের উপর বার্ষিক তীর্থ উৎসব পালন করে থাকে। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে উপাসনা করার জন্য এখানে নির্মাণ করা হয়েছে ৪৮ ফুট উচু দেশের সব চেয়ে বড় মা মারিয়ার মুর্তি। এখানে প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুইদিনব্যাপী বার্ষিক তীর্থ উৎসব পালিত হয়। করোনা ভাইরাসের কারনে গত দুই বছর সংক্ষিপ্ত ভাবে অনুষ্ঠিত হলেও এবছর জাকজমক ভাবে ২৪তম বার্ষিক তীর্থ উৎসব পালিত হয়। এই উৎসবে পাপস্বীকার, মহাখ্রিস্টযাগ, মোমবাতি জ্বালিয়ে আলোক শোভাযাত্রা, সাক্রামেন্তের আরাধনা, নিরাময়, ধর্মিয় আলোচনা, নিশিজাগরণ ও জীবন্তক্রশের পথসহ নানা অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছে।
বারমারী ধর্মপল্লীর সহ-সভাপতি ও সাবেক ট্রাইবাল চেয়ারম্যান মি. লুইস নেংমিনজা এসাংবাদিককে জানান, এবারের র্তীথ উৎসবে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বনানীর মেজর সেমিনারীর প্রাক্তন রেক্টর রেভারেন্ট ফাদার গাব্রেল কোরাইয়া।
এতে পুরহিত হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের বিকার জেনারেল রেভারেন্ট ফাদার সিমন হাচ্চা।
তীর্থ উৎসবে প্রায় দেশীবিদেশীসহ ৪০/৫০ হাজার তীর্থ যাত্রী নারী-পুরুষের আগমন ঘটে। উৎসবের নিরাপত্তা প্রদানে এখানে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস, বিজিবি, আনসার, গ্রাম পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকদল নিয়োজিত ছিলো। এছাড়া তীর্থস্থান এলাকাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখতে উৎসবের সার্বিক কার্যক্রম সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করা হয়। সরকার প্রতিবছরই আমাদের তীর্থ উৎসবকে গুরুত্বের সাথে নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। নানা কর্মসুচীতে টানা ২দিনব্যাপী শান্তিপুর্ন ভাবে ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের মাধ্যমে খ্রিষ্ট ভক্তদের বৃহৎ ফাতেমা রানীর ২৪তম তীর্থ উৎসব সমাপ্ত হয়েছে।
Leave a Reply