(ছাগল লাফায় খুঁটির জোরে। প্রতারকদের সাথে বিভিন্ন বড় বড় কর্মকর্তাদের পরিচিত ভাই, শালা সহ ইত্যাদির সাথে থাকে গভীর সখ্যতা। এসব প্রতারকরা হাজারোও অপরাধ করে প্রশাসনের নাকের ডগায় থাকে অধরা।)
সামছুদ্দিন জুয়েল :
দেশে চলছে অভিনব কায়দায় প্রতারণা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সন্ত্রাসীরা নিজ নিজ এলাকায় র্যাব ও প্রশাসনের কারণে আদিপত্য বিস্তার করতে না পেরে তারা বিভিন্ন ভাবে প্রতারণার নাটক সাজিয়ে একেক সময় একেক জন ব্যবসায়ীকে শিকার বানিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ।
এমনই এক সন্ত্রাসী প্রতারক চক্রের জীবন কুন্ডুলী উঠে এসেছে দৈনিক আমার প্রাণের বাংলাদেশের অনুসন্ধানে। ১। নড়াইলের রাজিব শাহা, (পিতা- গণেশ শাহা, সাং- নরাগাতি, পোস্ট+থানা- নরাগাতি, নড়াইল)। ২। খুলনার রবিউল, (পিতা- ইউনুস মল্লিক, ৮০, গোবর চাকা মেইন রোড, সোনা ডাঙ্গা, খুলনা)। ৩। রূপসার কামাল খান, (পিতা- আব্দুর রশিদ খান, সাং- দেওড়া, থানা- রূপসা, জেলা- খুলনা)। ৪। সুশিল কুন্ড, পিতা- অজ্ঞাত, সাং- ৮ক/১, সুলতান আহমেদ রোড, মৌলভীপাড়া, খুলনা সদর, খুলনা। এই সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য প্রায় একশত ছুইছুই।
সারাদেশে আছে এদের নেটওয়ার্ক। কখনো কাউকে বিদেশে পাঠানোর গল্প, আবার কখনো টাকা পাবে এমন মিথ্যা জাল দলিল সৃজন করে তৈরি করে টাকা আদায়ের নাটক। আবার কখনো ঘটক সেজে বড় লোক ছেলে সাজিয়ে বিয়ের নামে হাতিয়ে নেয় স্বর্বস্ব। চোরের দশ দিন গৃহস্থের একদিন। প্রায় দুই যুগ যাবৎ অত্যন্ত সুনামের সাথে রাজধানীর ভাটারায় ব্যবসা করে আসছে মোঃ জসিম উদ্দিন। ব্যবসার পাশাপাশি তিনি একজন অভিনয় শিল্পী। তিনি অভিনয় শিল্পীর সঙ্গে একজন গর্বিত সদস্য। তাছাড়া বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে তার তুখোর মুখোশ উন্মোচিত লেখা ইতিমধ্যে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
সম্প্রতি ০২-০২-২০২৩ ইং তারিখ সকাল ১০ ঘটিকার সময় কিছু দুষ্কৃতি টাইপের লোকেরা ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিনের ভাটারার অফিসে অবৈধভাবে প্রবেশ করে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং তার রুমে থাকা মোবাইল সেট মানি ব্যাগ যাহার ভিতরে ২৫ হাজার টাকা সহ গুরুপূর্ণ কাগজপত্র ছিল, সবকিছু নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তাকে হুমকি প্রদান করে। আমাদেরকে ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে, নাহলে এখানে ব্যবসা করতে পারবিনা।
এ বিষয় নিয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মোঃ জসিম উদ্দিনের সাথে দৈনিক আমার প্রাণের বাংলাদেশের কথা হলে তিনি জানান, এই এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যবসা করে আসছি। রাজনৈতিক ব্যক্তি থেকে শুরু করে এলাকার গণ্যমান্য মানুষের আমার সুসম্পর্ক আছে। আমার অফিসে আসা চাঁদাবাজদেরকে আমি চিনতে পেরেছি। তারা আমার প্রয়াত ভগ্নিপতি যিনি ২০১৮ সালে মারা যায়, তার সাথে চলাফেরা করতে দেখেছি। ভুক্তভোগী জসিম উদ্দিনের নিকট থেকে বিস্তারিত জেনে শুরু হয় প্রাণের বাংলাদেশের অনুসন্ধান। ধীরে ধীরে বেড়েই আসে থলের বিড়াল। এ যেন এরশাদ সিকদারের লোমহর্ষক কাহিনীকেও হার মানাবে। এরশাদ সিকদার তো মানুষ এনে মেরে ফেলতো। এসব প্রতারকরা প্রথমে মানুষের সাথে মিশে যায়। তারপর সুযোগ বুঝে সম্পূর্ণ পরিবারকে নিঃস্ব করে কেটে পড়ে।
এ বিষয় নিয়ে মোঃ জসিম উদ্দিন মোকাম বিজ্ঞ সিএমএম আদালত ঢাকায় একটি সিআর মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৭১/২০২৩, তাং- ০৭/০২/২০২৩ ইং। ধারা- ৩২৩/৩২৪/৩৮৫/৩৮০/৫০৬ দন্ডবিধি। মামলার আসামী যথাক্রমে রাজিব শাহা, রবিউল, কামাল খান, সুশিল কুন্ড। মামলায় উল্লেখ করা হয়, বিবাদীরা প্রতারক মাদকসেবী ও চাঁদাবাজ দলের সদস্য বটে। বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিনের পরিবার ভীষণ উদ্ধিগ্ন আছে বলে জানা যায়। এসব চাঁদাবাজরা ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিনকে হুমকি দিয়ে জানিয়ে যায়, আমাদের হাত অনেক লম্বা। অনেক বড় রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রী-এমপি এমনকি পুলিশের ডিআইজি, এসপি ও ওসি আমাদের পকেটে থাকে। তোর কাছে টাকা চাইছি, টাকা দিবি। আমাদের যদি কিছু করতে পারিস করিস। এভাবেই নাটক সাজিয়ে একজন সহজ সরল সফল ব্যবসায়ীদেরকে টার্গেট করে এই প্রতারক সিন্ডিকেট অভিনব কায়দায় বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে প্রতারণা করে আসছে বলে জানা যায়।
এ বিষয় নিয়ে ব্যবসায়ী মোঃ জসিম উদ্দিন বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানান, আদালতের মাধ্যমে আমি সুষ্ঠ বিচার না পেলে প্রয়োজনে সাংবাদিক সম্মেলন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারক লিপি প্রদান করবো। অনুসন্ধান করে জানা যায়, প্রশাসনের বিভিন্ন বড় কর্মকর্তাদের ভাই সেজে এসব চাঁদাবাজরা কিছু অসাধু প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে আতাত করে রাজধানী জুড়ে একটি প্রতারণা বাণিজ্য চালিয়ে আসছে। এই চক্র বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে তাদের সামান্যতম দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে বড় অংকের চাঁদা দাবী করে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। এমনি একটি চক্র কিছুদিন পূর্বে তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর ভুয়া ম্যাজিষ্ট্রেট সেজে উত্তরার ১২ নং সেক্টরের একজন সচিব পদ মর্যাদার ব্যক্তি মালিকানাধীন বাড়ী থেকে গ্যাসের লাইন কাটার নামে হাতিয়ে নেয় ৫ লক্ষ টাকা।
এই চক্রের মূলহোতা হাবিবের সাথে রাজিব শাহার রয়েছে গভীর সখ্যতা। এসব প্রতারকদের এলাকায় খোঁজ নিলে জানা যায়, এক সময় তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক সহিংসতায় হাত বোমা থেকে শুরু করে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করতো। জামায়াত বিএনপি’র সাথে এদের কোন মদদ আছে কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখা সময়ের দাবী। এসব সন্ত্রাসী প্রতারকদের বিরুদ্ধে নিজ নিজ এলাকায় রয়েছে একাধিক মামলা।
এ বিষয় নিয়ে গোয়েন্দা অধিদপ্তরের উপ পুলিশ কমিশনারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এ রকম প্রতারকদের খবর আমরা পেয়েছি। বেশকিছু প্রতাকদের আমরা আইনের আওতায় এনেছি। বাকী প্রতারকদের ধরতে আমাদের টিম কাজ করছে।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply