শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
নীলফামারীতে ট্রেন আটকিয়ে মানববন্ধন ঢাকাসহ তাপপ্রবাহ বইছে ৬০ জেলায় সোনারগাঁয়ে ৭টি রেষ্টুরেন্টসহ দুই হাজার অবৈধ গ্যাস বিচ্ছিন্ন ১ জনকে আটক স্বাস্থ্যে বরাদ্দ বাড়ছে ১১৮৯ কোটি টাকা দাম কমবে ইন্টারনেটের ১৬১ টাকা কমলো ১২ কেজি এলপিজির দাম মেলান্দহের আদ্রা ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কুচক্রিমহলের ষড়যন্ত্র! উত্তরা আব্দুল্লাহপুর বেড়িবাঁধ রেললাইন বস্তি অপরাধ মাদকের অভয়ারণ্য গুলশান-বনানীর বিস্তৃত এলাকার একচ্ছত্র মাদক সম্রাট হুমায়ুন কবির গাজী ক্ষমতার জোরে অন্যের জমি দখলের চেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে; থানায় অভিযোগ

‘‘সবাই এখন ইয়াবা ব্যবসায়ী ’’ চারদিকে মাদকের ছড়াছড়ি

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২১ জুন, ২০১৯
  • ১০৩ Time View
(মুখে বড়-বড় কথা জ্ঞান গরিমায় কেউ কম যায় না দেশ প্রেম উতলিয়ে পড়ে। টাকার প্রশ্ন এলে বেমালুম সব ভূলে যায় কোথা থেকে কিভাবে এলো দেখার বিষয় না। প্রয়োজনে ঘু-য়ের মধ্যে চাটা দিলে যদি টাকা পাওয়া যায় তাও খায়। নেপথ্যে ঘুষ-দূর্নীতি, রক্ষক হচ্ছে ভক্ষক। অসৎ কর্মকর্তাদের গোপন আতাত, দ্রুত ধনী হওয়ার লোভে বাবার ছোঁয়ায় সবাই পাগল)

 

 

শের ই গুল:

অল্প পুঁজিতে বেশী লাভ এই লোভে সব শ্রেণী-পেশার মানুষ হয়ে উঠেছে ইয়াবা ব্যবসায়ী। সাংবাদিক,পুলিশ, মানবাধীকার কর্মী, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সদস্যরা, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক-ছাত্র, ড্রাইভার, মাস্তাণ-সন্ত্রাসী, আনসার, বিজিবি, সেনা, র‌্যাব সদস্য, গৃহিনী , মডেল, নায়ক-নায়িকা, ফুটপাতের দোকানদার, ফেরিওয়ালা, সরকারী-বেসরকারী অনেকেই। গ্রামে-গঞ্জে হাটবাজারে চাষী, মেথর সহ রিক্সাওয়ালা-টোকাই সবাই এখন ইয়াবা ব্যবসায়ী।

 

বিভিন্ন মাদক সহ ইয়াবা খেলে এর ব্যবহারে জাতি- দেশ একদিন শেষ হবে সবাই জানি। মস্তিষ্ক বিকৃত হয়, ক্যান্সার হয়, মরনঘাতী অসুখে জীবন হবে শেষ এটাও সবাই মানি কিন্তু তারপরও কেন সবাই ইয়াবা ব্যবসায় ঝুকে পড়ছে। এর একটাই কারন, সারা জীবনের অনেকের আকাশ ছোঁয়া কল্পনাকে এই ইয়াবা নামক বাবা এখন সহজ করে দিয়েছে। অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ এই লোভে সব শ্রেণী পেশার অনেক মানুষের মধ্যে ইয়াবা ব্যবসায়ীর আত্বপ্রকাশ ঘটছে। থেকে থেকে ধরা পড়ছে আইন শৃঙ্গলা বাহিনীর হাতে। জাতিও জানতে পারছে, ইয়াবা বা অন্য কোন মাদক নিয়ে ধরা পড়া ব্যক্তি কোন শ্রেণী পেশার মধ্যে পড়ে।

 

কক্সবাজারে ইয়াবা গড-ফাদারদের একটি অংশ সম্প্রতি সরকারের কাছে আত্নসমার্পন করলেও সারা দেশ ব্যাপি এর নেটওয়ার্ক সক্রীয় হয়ে গেছে আগেই। আর যারা আত্নসমার্পন করেছে হয়ত তারা অনেক মাদকের চালানে অবৈধ টাকার পাহাড় গড়ে এখন সে ক্রসফায়ারের ভয়ে নিজেকে সোর্পদ করেছে আইনের কাছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সূযোগ্য কন্যা সাহসী সত্যবাদী নেত্রী মাদকের বিষয়ে জিরো টলারেন্স ঘোষণা দিয়েছেন।

 

র‌্যাবের মহাপরিচালক সারা দেশ ব্যাপি মাদক নির্মূলে তার বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন। অনেক সৎ-নিষ্ঠাবান পুলিশ-র‌্যাব সহ অন্যান্য সংস্থার চৌকস কর্মকর্তা- কর্মচারীরাও রেখেছে যথেষ্ঠ ভূমিকা। মাদক নির্মূলে চলছে আক্রমন, ফায়ার। প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় আসছে, এখনো মাঝে মাঝে আসে, ক্রসফায়ারে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের লাশ।

 

এসেছে নতুন আইন, পঁচিশ গ্রামেই মৃত্যুদন্ড। তারপরও থেমে নেই এই অশুভ শক্তি ইয়াবার আগ্রাসন। কারন দেশেএখন লক্ষ লক্ষ ইয়াবা সেবী। যারা প্রতিদিন ইয়াবা সেবন করে। এদের মধ্যেও আছে বিভিন্ন স্তর। কারো কারো প্রয়োজন হয় কয়েক ঘন্টা পর পর, কারো কারো দিনে একবার অধিক সেবনে অধিক চাহিদা। ধীরে ধীরে বিষয়টি এমন, ইয়াবা না হলে এক মুর্হূত্বও চলে না।

 

পাশ্ববর্তী দেশ মীয়ানমার মনে হয় এটাই করতে চেয়েছিল বাংলাদেশ হবে মাদকের মার্কেট। এখানে থাকবে কোটি কোটি মাদক সেবী। হয়ত এই বিষয়টি দমন করতে না পারলে এই ভয়ঙ্কর বিষয়টি মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়বে দেশে যুব সমাজ, ছাত্র-ছাত্রী সহ সব পেশা শ্রেণীর কম বেশী সবাই হয়ে যাবে মাদকাসক্ত। মাদকের অশুভ উত্থানের লাগাম টেনে ধরে রাখা হবে র্দুস্কর বিষয়। একটু খেয়াল করুন এতো ভয়ভীতি, ধর-পাকর, হামলা-মামলা, ক্রসফায়ারেও কেন থামছে না মাদক। প্রতিদিন পরিবর্তন হচ্ছে মাদক প্রবেশের পথ-ঘাট। ভিন্ন ভিন্ন রাস্তায় যেখানে মাদক পাওয়ার কথা নয় সেখানেও ধরা পড়ছে মাদকের বড়-বড় চালান।

 

ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে বিষ বাষ্পের মতো আসছে ইয়াবা সহ সর্বনাশা মাদকদ্রব্য। মিয়ানমার ও ভারতের মাফিয়া চক্র শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পৌঁছে দিচ্ছে এসব মাদক। আর দেশীয় চোরা চালানী নিত্য নতুন কৌশলে তা ছড়িয়ে দিচ্ছে তৃনমূল পর্যায়ে। উভয় দেশগুলোর মধ্যে মাদক ব্যবসা অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও ব্যবসা অব্যাহত রেখেছে তারা।

 

মাঝে মাঝে স্থানীয় প্রশাসন হুংকার দিয়ে মাদকের র্নিমূলে অভিযান চালালেও বরাবরই মাদক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত রাঘববোয়ালরা রয়ে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে প্রশাসনের কিছু সদস্যও রাজনৈতিক কথিত পরিচয়ধারীদের অনেকের সখ্যতা বিদ্যমান থাকায় বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখছেন সচেতন কেউ কেউ। তাদের ধারণা এমনটা হলে কেমনে বন্ধ হবে এই অপকর্ম। কারন রক্ষক যদি হয় ভক্ষক, এদিকে আইন শঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্যই বড় বড় ইয়াবার ডিলার হয়ে উঠেছে। থানায় বিশাল চোট পাট চব্বিশ ঘন্টাই তিনি মাদক নিয়ে গবেষনা করে। তার পিছনে ছুটে প্রায় শ-খানিক সোর্স। তাদের কাজ শুধু মাদক ব্যবসায়ী – মাদক সেবীর খোঁজ দেয়া। মাঝে মাঝে দুই-একজন ধরেও। মূলত এই অফিসারই একেকজন মাদক ইয়াবার ডিলার। বেশি পন্ডিত্য জাহিলের মধ্যেই করে তার মাদক সিন্ডিকেট কন্ট্রোল। প্রতিদিন গড়ে চারশত থেকে পাঁচশত মাদক সে বিক্রি করে।

 

 

এভাবেই অনেক দায়িত্বশীলরা তাদের মূলনীতি থেকে দূরে সরে গিয়ে এতটাই অধোপতনে নেমে গেছে যে, তিনি নিজেই একজন নিয়মিত মাদকসেবী হয়ে উঠেছে। এ ব্যাপারে এই মূহুর্তে প্রশাসনের পাশাপাশি প্রয়োজন সামাজিক আন্দোলন জোরদার। নয়তো, ধ্বংসের দিকে দ্রুত ধাবিত হচ্ছি আমরা সবাই। পত্রিকার পাতায় টেলিভিশনের স্ক্রীনে দেখা যায়, অমুক থানার, অমুক পত্রিকার সাংবাদিক, অমুক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, সরকারী অমুকআমলা, অমুক মন্ত্রী-সচিবের গাড়িতে পাওয়া গেছে ইয়াবা। সত্যিকার অর্থে, কোন ব্যক্তির অপকর্মের জন্য কোন প্রতিষ্ঠান দায়ী না। মন্দের চেয়ে ভালোর সংখ্যাই বেশী। পৃথিবীতে মানুষ মাপার মেশিন নাই বিধায় চেহারার অন্তরালের অপরাধ উন্মোচিত ব্যতিত জানা যায় না তার গোপন পরিচয়।

 

এখন শুধু কক্সবাজার নয়, নজর রাখতে হবে সারা দেশ ব্যাপী। সাতারার, দেবহাটার হাড়দ্দাহ, শাখরা, খানজানিয়া, কালীগঞ্জের উকশা, বাঁশবাড়িয়া, রসুলপুর, বসন্তপুর, শ্যামনগরের কৈখালী, মদরের ভোমরা, গাজীপুর, বৈকারী, কুশখালী, তলুগাছী ও কলারোয়ার কেড়াগাছী, কাকডাঙ্গা, ভাদিয়ালী, মাদরা, হিজলদি, সুলতানপুর,ও চান্দুরিয়া সীমান্তসহ ৩০টি পয়েন্ট এবং যশোরের সাদ্যপুর, বাদা আচঁড়া শিখারপুর, মাসিলা, ঝিনাইদহের সাদপুর, সামান্তা, চুয়াডাঙ্গার জীবন নগর, রাজাপুর, দর্শনা, মেহেরপুরের গাংনী, মজিবনগর, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর কুড়িগ্রাম, রৌমারী সীমান্ত সহ কুমিল্লার কসবা, নোয়াখালী , সুন্দরবন হয়ে বরিশাল সহ বিভিন্ন ঘাট এলাকা দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে আসে বিভিন্ন প্রকার মাদক দ্রব্য। তার মধ্যে অন্যতম এখন ইয়াবা ওরফে (বাবা) ।

 

ঘাট এলাকা থেকে ইয়াবা নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে ব্যবহার করা হয়, বাস-ট্রাক, ট্রেন, মাইক্রো সহ দামি গাড়ী, প্রাইভেট মটর সাইকেল ও সর্বপরী পথচারী বেশে লোকদের বাজার ব্যাগে, বর্তমানে ইয়াবা পাচারে দেশের অভ্যন্তরে ব্যবসায়ীরা নিত্য নতুন সব কৌশল অবলম্বন করছে। কাঠ, কুমড়া, ডাব, কলা, তরমুজ, আম, সাইকেলের টিউব, গাড়ীর পার্সের ভিতরে সহ মানুষের লজ্জা স্থানে, এমনকি গিলেও খেয়ে পেটের মধ্যে বহন করছে এই ইয়াবা। প্রায়ই ধরা পড়ছে, কিন্তু একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি ব্যবসা। বেনাপোল, মহেশপুর, চৌগাছা, সামান্তা, রাজগঞ্জ, তালা, পাটকেল ঘাটা, দর্শন, জীবন নগর, মেহেরপুর, কলা রোয়া, দৌলতপুর, যুগিবাড়ী, বোঘালিয়া, পাচপৈাতা, বেলে ডোঙ্গা, সোনাবাড়িয়া, বুচতলা, রয়ের ডাঙ্গা, রাম ভদ্রপুর,গয়ডা,কাজিরহাট, ঠাকুর বাড়ী সহ বিভিন্ন জেলা শহর গ্রামে এখন ইয়াবার ছড়াছড়ি।

 

 

সারা দেশ ব্যাপি ছড়িয়ে আছে কয়েক লক্ষ ডিলার। ইয়াবা সেবীরাই হয়ে যায় ব্যবসায়ী। বাংলাদেশে ইয়াবা-ফেনসিডিলের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের অনেক সিমান্তের নিকট গড়ে উঠেছে মাদকের কারখানা, কোনপুলেঞ্জ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তের বনগাঁ, রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, বানপুর বহরমপুর, ও বাবাসাত সহ বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে মাদক তৈরির কারখানা। অন্যদিকে মীয়ানমার সমুদ্র ও সীমান্ত এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে ইয়াবার কারখানা। সীমান্তে নজরদারী না থাকায় এবং কিছু কিছু এলাকায় থাকলেও বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে কিংবা নগদ অর্থে ঘুষের বিনিময়ে সেগুলো সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশের ভেতরে চলে আসছে। মাদক ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে রাতারাতি পৌঁছে যাচ্ছে খোলা বাজারে।

 

 

অবস্থা এমন যে, দেশে এখন মাদক ও নেশার বিভিন্ন সামগ্রীর ছড়াছড়ি চলছে। ঔষধের দোকানে শুধু নয়, এসব কিনতে পাওয়া যাচ্ছে এমনকি পানের দোকানেও। রাজধানীতে তো বটেই। প্রতিটি জেলা ও উপজেলা, শহর থেকে গ্রামের হাট বাজারে পর্যন্ত প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন নেশার সামগ্রী। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে যেন কোন মাদক প্রবেশ করতে না পারে, তার কঠিন থেকে কঠিনতম ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। এ ব্যাপারে, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশকে তৎপর হতে হবে। মাদকের বিষয়ে শতভাগ সততা ও সোচ্চার আজ সময়ের দাবী।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়