মোঃ শাকিল খান, ইন্দুরকানী প্রতিনিধি:
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্য মধুবৃক্ষ খেজুর গাছ। মায়ের হাতে বানানো হরেক রকমের পিঠা-পুলি খাওয়ার ধুম। এজন্য একসময় তীব্র শীতের মাঝেও খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত থাকতেন গাছিরা। গত কয়েক বছরের ব্যবধানে ক্রমবর্ধমান মানুষের বাড়ি-ঘর নির্মান ইটভাটায় পোরান জন্য নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে ক্রমেই খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। গত কয়েক বছর পূর্বেও শীতকালে এসব এলাকার গাছিরা খেজুর গাছের রস সংগ্রহে খুবই ব্যস্ত সময় পারকরতেন। তারা খেজুরের রস ও পাটালী গুড় বিক্রি করে বিপুল অংকের টাকা আয় করতেন। খেজুর রস দিয়ে শীত মৌসুমে পিঠা ও পায়েস তৈরির প্রচলন থাকলেও শীতকালীন খেজুর গাছের রস এখন দুষপ্রাপ্য হয়ে পড়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, নতুন করে গাছের চারা রোপণ না করা এবং গাছ কাটার পদ্ধতিগত ভুলের কারণে প্রতি বছর অসংখ্য খেজুর গাছ মারা যাচ্ছে। এছাড়া এক শ্রেণীর অসাধু ইটভাটার ব্যবসায়ীরা জ্বালানি হিসেবে খেজুর গাছ ব্যবহার করার কারণে ক্রমেই কমে যাচ্ছে খেজুর গাছের সংখ্যা। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শীত পড়ার শুরুতে উপজেলার সর্বত্র পেশাদার খেজুর গাছির চরম সংকট পড়ে। তার পরেও কয়েকটি এলাকায় শখের বশত গাছিরা নামেমাত্র খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজ করছেন। শীত যতো বাড়বে খেঁজুর রসের মিষ্টতাও ততো বাড়বে। শীতের সাথে রয়েছে খেঁজুর রসের এক অপূর্ব যোগসূত্র। গ্রামে গ্রামে খেজুরের রস দিয়ে তৈরি করা নলের গুড়, ঝোলা গুড়, দানা গুড় ও বাটালী গুড়ের মিষ্টি গন্ধেই যেন অর্ধভোজন হয়ে যেতো। খেজুর রসের পায়েস, রসে ভেজা পিঠাসহ বিভিন্ন সুস্বাদু খাবারেরতো জুড়িই ছিলোনা। কিন্তু কালের বির্ততনে প্রকৃতি থেকে আজ খেজুরের রস একেবারেই হারিয়ে যেতে বসেছে। জানা যায়, প্রাচীণ বাংলার ঐতিহ্য খেজুর গাছ আর গুড়ের জন্য একসময় এ অঞ্চল বিখ্যাত ছিলো। অনেকে শখের বশে খেজুর গাছকে মধুবৃক্ষ বলে থাকতেন। ইটভাটায় খেজুর গাছ পোড়ানো আইনত নিষিদ্ধ হওয়ার পরেও ইটভাটার মালিকেরা সবকিছু ম্যানেজ করে ধ্বংস করে চলেছে খেঁজুর গাছ। গত কয়েক বছর ধরে ইট ভাটার জ্বালানি হিসেবে খেজুর ফলে এ জনপদের মানুষ এখন খেজুর রসের মজার মজার খাবার অনেকটাই হারাতে বসছে।খেজুর গাছ না থাকায় এখন আর সেই রমরমা অবস্থা নেই। শীতকাল আসলেই এই অঞ্চলে প্রতি হাড়ি খেজুর রস এক থেকে ৮০/৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তাও চাহিদার তুলনায় খুবই কম।
পিরোজপুর রেঞ্জ বন কর্মকর্তা দিপঙ্কর রায় বলেন, ইতি মধ্যে আমরা ২০১৬-১৭ অর্থবছরে খেজুর গাছ রোপন ও রক্ষনাবেক্ষনের পদক্ষেপ নিয়েছি। জেলার কয়েকটি উপজেলায় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী বছর প্রতিটি উপজেলায় খেজুর গাছ রোপন করা হবে
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply