হাসনাত রাব্বু, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার হালসা ক্লিনিক চালুর ১০ দিন পর ভুল অপারেশনে এক সিজারিয়ান রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
গত ১১ ডিসেম্বর রাতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও ক্লিনিক সূত্রে জানা গেছে, মিরপুর উপজেলার হালসা শুপুরিয়া এলাকার মোজাম মোল্লার মেয়ে ও পার্শ্ববর্তী ফকিরাবাদ এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী মর্জিনা গত ১১ ডিসম্বের প্রসব বেদনায় হালসা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ঐ দিন রাতে সিজারিয়ান অপারেশনে বাচ্চা জন্ম নেয়। অপারেশনে রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরন হয়। সেখানে রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে ওই রোগীকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে।
পরবর্তীতে কুষ্টিয়া থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হলে রাজশাহীতে যাওয়ার পর রোগী মারা যায়।
ক্লিনিকের মালিক মাহফুজুর রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: বিডিদাস পিকলু সিজারিয়ান অপারেশন করেন। অপারেশনে রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। তাই রোগীকে রক্ত দেওয়ার জন্য রোগীর স্বজনদের বলা হয়েছিলো। কিন্তু রোগীর অবস্থা খারাপ হলে তাকে কুষ্টিয়ায় রেফার্ড করা হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে ডাক্তার বিডিদাস পিকলুর মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ক্লিনিক মালিকের পার্টনার স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক ডা: নজরুল ইসলাম জানান, রক্ত দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই রোগীর রক্ত চাপ বেড়ে যায়। পরে তাৎক্ষনিক ভাবে তাকে কুষ্টিয়ায় রেফার্ড করা হয়। শুধু তাই নয়, আরো একজন রোগী এখানে অপারেশন করার পর তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে তাকেও রাজশাহী মেডিক্যাল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
এই ক্লিনিকে মৃত্যুর ঘটনার পর আবারো আরও এক রোগীর অবস্থা খারাপ এমন প্রশ্ন করলে ডা: নজরুল ইসলাম জানান, মানুষের জীবন একমাত্র আল্লাহর হাতে। আমরা দায়িত্ব সহকারে রোগীর সেবা দিয়ে থাকি। এদিকে ১০ বেডের এই ক্লিনিকে সরজমিনে গিয়ে যায়, সেখানে দুজন পল্লী চিকিৎসক ছাড়া কোন এমবিবিএস ডাক্তার নেই, নেই দক্ষ সেবিকা। সব থেকে দুঃখজনক ব্যাপার ঐ ক্লিনিকটি এখনও ছাড়পত্র পাইনি। তবুও কেমন করে চলছে সেই প্রশ্ন সকলের। অনেকের প্রশ্ন এটি ক্লিনিক না কষায় খানা! যেখানে ১৫দিনের মধ্যে এক জনের মৃত্যু ও একজন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডাঃ নাজমুল ইসলাম জানান, অনুমোদন ছাড়া কোন ক্লিনিক চালানো দণ্ডনীয় অপরাধ। হাসপাতালের মহাপরিচালকের লিখিত অনুমতি যারা পাবে তারাই ক্লিনিক চালাতে পারবে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। যদি তারা অবৈধভাবে ক্লিনিক পরিচালনা করে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply