নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র ব্লগার নাজিমুদ্দিন সামাদ হত্যার সাত বছর পার হলেও মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার এখনও শুরু হয়নি। কবে নাগাদ বিচার শুরু হবে নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না রাষ্ট্রপক্ষ। তবে তারা আশা করছেন, দ্রুতই মামলার বিচার শুরু হবে। মামলায় আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা হবে।
২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শেষে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় মেসে ফেরার পথে লক্ষ্মীবাজারের একরামপুর মোড়ে জঙ্গিরা হত্যা করেন ব্লগার নাজিমুদ্দিনকে। এ ঘটনায় পরদিন সূত্রাপুর থানার এসআই মো. নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। চার বছরের অধিক সময় তদন্ত করে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট ৯ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে। মামলাটি বর্তমানে ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালতে চার্জ শুনানির পর্যায়ে রয়েছে। সর্বশেষ গত ৩০ মার্চ মামলাটি চার্জ শুনানির জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু ওই দিন এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা চার আসামিকে নিরাপত্তানিত কারণে আদালতে হাজির করা হয়নি। এজন্য আদালত চার্জ শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ২৩ মে ধার্য করেন।
মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম ছারোয়ার খান জাকির বলেন, ব্লগার নাজিমুদ্দিন হত্যা মামলাটি চার্জ শুনানির পর্যায়ে রয়েছে। আসামিদের আদালতে হাজির না করায় মামলাটির চার্জ শুনানি হচ্ছে না। আগামী তারিখে আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে চার্জ গঠন হবে বলে আশা করছি।
বিচার শুরু হতে বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, মামলাটির তদন্ত করতে অনেক সময় গেছে। চার বছরেও অধিক সময় মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়। এর মাঝে আবার করোনার কারণে আদালত বন্ধ ছিল। ৫ আসামি পলাতক রয়েছে। আসামি পলাতক থাকলে আবার কিছু প্রসেসিংও থাকে। সবকিছু শেষ করে মামলাটি চার্জ শুনানির পর্যায়ে আছে। আশা করছি, দ্রুত মামলার চার্জ শুনানি হয়ে যাবে। মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের পর্যায়ে আসলে সাক্ষী হাজির করে মামলাটির বিচার দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করবো। ভূক্তভোগী পরিবার যেন ন্যায়বিচার পায় সেই চেষ্টা করবো। ঘটনার সময় নাজিমুদ্দিনের সঙ্গে ছিলেন তার বন্ধু মো. সোহেল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেই স্মৃতি আর মনে করতে চাই না। তবে ঘটনাটির অনেক বছর হয়ে গেছে। বন্ধু হত্যার ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শেষে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় মেসে ফেরার পথে লক্ষ্মীবাজারের একরামপুর মোড়ে জঙ্গিরা কুপিয়ে এবং গুলি করে হত্যা করেন ব্লগার নাজিমুদ্দিনকে। এ ঘটনায় পরদিন সূত্রাপুর থানার এসআই মো. নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। ২০২০ সালের ২০ আগষ্ট বহিষ্কৃত মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হক জিয়াসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।
মামলার আসামিরা হলেন-মেজর জিয়া, আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া,আকরাম হোসেন, মো. ওয়ালিউল্লাহ ওরফে ওলি ওরফে তাহেব ওরফে তাহসিন, সাব্বিরুল হক চৌধুরী ওরফে আকাশ ওরফে কনিক, মাওলানা জুনেদ আহাম্মেদ ওরফে সাব্বির ওরফে জুনায়েদ ওরফে তাহের, রশিদুন নবী ভূইয়া ওরফে টিপু ওরফে রাসেল ওরফে রফিক ওরফে রায়হান, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, মো. আরাফাত রহমান ও মো. শেখ আব্দুল্লাহ।
আসামিদের মধ্যে প্রথম পাঁচ জন পলাতক রয়েছেন। শেষের চার জন কারাগারে আছেন।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply