শওকত মন্ডল, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নিজ ভগ্নিপতি, অনিয়মিত ভাবে অধ্যক্ষ নিয়োগ। অধ্যক্ষের বিল ধরিয়ে বিল উত্তোলন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জোরপূর্বক সরিয়ে দিয়ে উক্ত চেয়ারে বসে নিজে অধ্যক্ষ হিসেবে দাবী করে। ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে প্রতিষ্ঠানের গাছ কর্তন করে বিক্রয়, বিভিন্ন ফান্ড থেকে অর্থ উত্তোলন করে অর্থ অত্মসাৎ। শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন বিল থেকে বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন। সোনালী ব্যাংকে কলেজ ফান্ডের অর্থ একক ভাবে উত্তোলন। কলেজে ভর্তি ফি, পরিক্ষার ফি, সেশন ফি, নিজ স্বাধীন মতো কাউকে না জানিয়ে লুটপাটসহ সহকারি শিক্ষক অধ্যক্ষের মধ্যে রশিটানাটানিতে শিক্ষা ব্যবস্থা বেহালসহ অধ্যক্ষ ফরহাদ আলীর বিরুদ্ধে বারবার নানা অনিয়মের অভিযোগ। দেখার যেন কেউ নাই।
অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে, দাবীকৃত অধ্যক্ষ ফরহাদ আলীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতির ও বে-আইনি কার্যকলাপের প্রেক্ষিতে ১৯ মে ২০২০ সালে প্রথমে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ প্রেরণ। কলেজের বিভিন্ন ফান্ড থেকে একক স্বাক্ষরে রৌমারী সোনালী ব্যাংক শাখা থেকে অর্থ উত্তোলনের দায়ে গত ২৮ মে ২০২০ সালে অধ্যক্ষ ও ম্যানেজার সোনালী ব্যাংক শাখাকে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান। ২৫ জুন ২০২০ সালে ২টি অভিযোগ দিলে, অভিযোগের ভিত্তিতে ভাইস চ্যান্সেলর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গাজিপুর যাহা তদন্ত ও দুর্নীতিরোধ সেলে তদন্তাধীনে রয়েছে। বিজ্ঞ যুগ্ন জেলা জর্জ ২য় আদালত কুড়িঃ ৮ আগষ্ট ২০২০ তারিখ যাহার ১১/২০২০ নং মামলা দায়ের এবং বিচারাধীন রয়েছে।
উপাধ্যক্ষ মতিয়ার রহমানের অভিযোগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক শৃঙ্খলা ও নিবাপত্তা দপ্তর আখতারুজ্জামান সরেজমিনে তদন্তপূর্বক পূর্নাঙ্গ প্রতিবেদন ভাইস চ্যান্সেলর এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক অধ্যাপক এসএম আঃ মতিন লস্কর এবং উপ-পরিচালক (কলেজ) উমর ফারুক দ্বয়ের সরেজমিন পূর্নাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর মহাপরিচালক দপ্তরে প্রেরণ করেছেন।
জানা যায়, উভয় তদন্তের ফলে এবং প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে দাবীকৃত অধ্যক্ষ ফরহাদ আলীর বিধি বহির্ভূত নিয়োগকে অবৈধ ঘোষনা এমপিও স্থগিত, অধ্যক্ষ পদে নতুন করে নিয়োগ প্রদানের সুপারিশ এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব উল্লেখ করে পত্র প্রদান করা হয়েছে। অথচ এখনো বহাল তবিয়তে অধ্যক্ষের দাবীতে চেয়ারে বসে রয়েছেন।
বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় শিক্ষার মানের অবনতিসহ বিগত জুলাই ২০২২ থেকে সংবাদ প্রকাশ পর্যন্ত (অদ্যাবধি) শিক্ষক কর্মচারির বেতন ভাতা উত্তোলন সম্ভব হয়নি। আরো উল্লেখ্য যে, দাবীকৃত অধ্যক্ষ ফরহাদ আলী দীর্ঘদিন ধরে কলেজের বিভিন্ন ভাবে আয়কৃত লক্ষলক্ষ টাকা কাউকে না জানিয়ে হিসাব নিকাশ ছাড়াই মনের ইচ্ছামত খরচ করেছে। এমনকি কলেজে রোপনকৃত বড়বড় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ সুযোগ বুঝে গোপনে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাত করেছেন।
গাছ কর্তনের বিষয় অভিযোগ হলেও কোন তদন্ত হয়নি। বর্তমানে ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় আরো ব্যাপোরোয়া। নিজ ইচ্ছামত প্রতিষ্ঠানের আয়ের টাকা কলেজ ফান্ডে জমা না দিয়ে দাবীকৃত অধ্যক্ষ নিজেই বিভিন্ন ভূয়াবিল ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলন করে ব্যক্তিগত খাতে ব্যয়করছেন, যাহা বিধি বহির্ভূত এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য মারাত্মক ব্যধিকর।
ঐ এলাকার জনপ্রতিনিধি আনছার আলী তুহিনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ বলেন, দীর্ঘদিন থেকে কলেজে অধ্যক্ষ নিয়ে টানা হেচড়ায় শিক্ষার মান বেহাল। কলেজের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। প্রশাসনের দ্রুত সু-নজরে কলেজের পরিবেশ ফিরিয়ে এনে শিক্ষার মান বজায় রাখতে। অন্যদিকে শিক্ষক কর্মচারিদের বেতন ভাতা উত্তোলন করে কষ্টের হাত থেকে বাঁচার সুপারিশ করছি।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী ভারঃ অধ্যক্ষ ফকরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান দাবীকৃত অধ্যক্ষ ফরহাদ আলীর নিয়োগ ও অধ্যক্ষের নামে বিল অবৈধ, স্থানীয় ক্ষমতা দেখিয়ে আমাকে সরিয়ে জোরপূর্বক অধ্যক্ষের দাবীতে আমার চেয়ারে সে বসেছে। শিক্ষক কর্মচারির বেতন ভাতা উত্তোলন সম্ভব করতে পারেনি। শিক্ষক কর্মচারীরা অর্থের অভাবে পরিবার নিয়ে কষ্টে দিনাতী পাত করছে। দীর্ঘদিন ধরে কলেজের বিভিন্ন ভাবে আয়কৃত লক্ষলক্ষ টাকা কাউকে না জানিয়ে হিসাব নিকাশ ছাড়াই মনের ইচ্ছামত খরচ করছে। কলেজে রোপনকৃত বড়বড় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ সুযোগ বুঝে গোপনে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাত করেছেন। তার বিভিন্ন অনিয়ম ও শিক্ষক কর্মচারিদের মধ্যে মনকষাকশির কারনে শিক্ষার মান বেহাল।
দাবীকৃত অধ্যক্ষ ফরহাদ আলীকে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এরকম অভিযোগ এর আগে অনেক দিয়েছে। কিছুই করতে পারেনি। এ অভিযোগে কিছুই হবে না। কি পারেন লেখেন গিয়ে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূবণ আখতার বলেন, আমি উপজেলায় নতুন এসেছি। কলেজের অভিযোগ পেয়েছি। দেখে আলোচানা পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই সাইটের কোন লেখা কপি পেস্ট করা আইনত দন্ডনীয়
Leave a Reply